নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ ঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুর এলাকায় একটি কোম্পানির নিকট দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে কোম্পানির ম্যানেজারসহ ৪জনকে বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবুর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় আহত ট্রাক চালক জসীমউদ্দিন বেপারী বাদি হয়ে সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের গঙ্গাপুর বাজার এলাকায় অবস্থিত কাম্মীর স্ট্রীল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড থেকে পন্য বোঝাই করে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কাঁচপুর সোনাপুর এলাকায় সোনারগাঁও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবুর বাড়ির সামনে আসলে বাবুর সহযোগী মুমিনুল ওরফে মমিন ও মনিরসহ ৭-৮জনের একটি দল লাঠিসোঠা নিয়ে ট্রাকটি গতিরোধ করে। এসময় ট্রাক থেকে চালক জসিমউদ্দিন বেপারীকে নামিয়ে পাশ্ববর্তী একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এসময় তাকে বৈদ্যুতিক শর্ক দেয়। এসময় সে ছিটকে পড়ে একটি টিভি ভেঙ্গে ফেলে। কিছুটা সুস্থ হলে কোম্পানির ম্যানেজার মোখলেছুর রহমানকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিতে ফোন দেওয়া হয়। কোম্পানির ম্যানেজার মোখলেছুর রহমান, শরীফ সরকার ও হিসাব রক্ষক তানভীর তাদের ওই কক্ষে আসলে তাদের আটক করে একই কায়দায় বৈদ্যুতিক শর্ক দেওয়া হয়। এসময় তাদের সঙ্গে থাকা নগদ ১৭ হাজার ৭ শত টাকা ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হলে পুলিশকে ফোন দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে আসামীরা পালিয়ে যায়। প্রতি মাসে ২০হাজার টাকা না দিলে এ পথে কোম্পানির কোন গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত ট্রাক চালক জসীমউদ্দিন বেপারী জানান, তিনি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির কাছ থেকে ট্রাক ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির পক্ষে গাড়ি চালান। ওইদিন ভাইস চেয়ারম্যান বাবুর সহযোগী মমিন ও মনিরের নেতৃত্বে লোকজন গাড়ি গতিরোধ করে টর্শার সেলে ৪জনকে আটক করে ৫০ হাজার টাকার জন্য নির্যাতন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্প মালিক জানান, ভাইস চেয়ারম্যান বাবু তার কোম্পনির কাছ থেকে প্রতি মাসে মাসোহারা চায়।মাসোহারা না দিলে কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। তার সহযোগীদের দিয়ে কোম্পনির লোকজনকে মারধর করে থাকে। এভাবে নির্যাতন ও চাঁদা চাওয়া হলে আমাদের কোম্পানি বন্ধ করে দিতে হবে।
অভিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু জানান, এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত না। এ বিষয়ে গত শনিবার পুলিশ তদন্ত করেছেন। এটা আমার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার।
সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের বিষয়ে মামলা গ্রহন করা হয়েছে। বিষয়টি অতি গুরুত্বে সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
আপনার মতামত দিন