শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ
       
শিরোনাম :
বিভাগীয় পর্যায়ে সোনারগাঁও জি আর ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের মেয়েরা সেমিফাইনালে উর্ত্তীণ মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম ফরাজী পিরোজপুর, সনমান্দি ও বারদীতে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উদযাপিত কাঁচপুরে পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে জখম কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত  মাত্র ১০ দিনে অবস্থান করে প্রলোভন দেখিয়ে অর্ধ কোটি টাকা  নিয়ে উধাও এনজিও ঘণ্টা বাজিয়ে খেলতে নামবো, দেখি বিএনপি কোথায় থাকে –শামীম ওসমান জামপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা দিয়েও ঠেকাতে পারছে না জমি দখল সোনারগাঁওয়ে ব্লক বাটিক এন্ড স্ক্রীন প্রিন্ট প্রশিক্ষণ উদ্বোধন সুফিবাদ সার্বজনীন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নিয়মিত সাব রেজিষ্ট্রারের দাবিতে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে ওই অফিসে কর্মকরত দলিল লেখকরা। বৃহস্পতিবার সকালে তারা এ কর্মবিরতি পালন করেছেন। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন দলিল লেখক, দাতা ও গ্রহিতারা। দলিল লেখকদের অভিযোগ, দলিল নিবন্ধন করতে গিয়ে তারা সাব রেজিষ্টার আলী আজগর (অতিরক্তি দায়িত্ব) দ্বারা ভোগান্তিতে পড়ছেন। তিনি দলিল নিবন্ধনে তার নিজের মতো ইচ্ছে মাফিক নিয়ম জুড়ে দিয়েছেন। সাব রেজিষ্টার সকল প্রকার দলিলে খাজনা, নামজারি, ডিসিআর ছাড়া দলিল নিবন্ধন করেন না। এছাড়াও তিনি সময় ক্ষেপন করে দলিল নিবন্ধন করার কারনে জমা দেওয়া সকল দলিল নিবন্ধন করতে পারেন না।

জানা যায়, ১৭১.০২ বর্গ কিলোমিটারের আয়তনের সোনারগাঁওয়ে ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। প্রতিদিন গড়ে এ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ২শ’ থেকে ২৫০টি দলিল নিবন্ধন হয়ে থাকে। এ থেকে প্রতিদিন সরকারের রাজস্ব আদায় হয়। সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়মিত সাব রেজিষ্টার নিয়োগ না পাওয়ার কারনে গত দেড় মাসে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। সোনারগাঁও সাব রেজিষ্টার আনম বজলুর রশিদ মন্ডল ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর বদলি হওয়ার পর থেকে এ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে কোন সাব রেজিষ্ট্রারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে জমি কেনা বেচা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২২ ডিসেম্বর আড়াইহাজার সাব রেজিষ্ট্রার মো. আলী আজগরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে কয়েকদিনের দলিল জমে থাকার কারনে দলিল নিবন্ধন সংখ্যা দীর্ঘ হয়। বর্তমানেরও দলিল নিবন্ধনে অনেক জট তৈরি হয়ে আছে। ফলে ওই সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখকরা তাদের দলিল নিবন্ধন করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন। শুধু দলিল লেখকই নয়, সঙ্গে দাতা ও গ্রহিতাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

সোনারগাঁও সাব রেজিষ্ট্রি সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ মোতাবেক আরএস রেকর্ড মূলে মালিক হলে দলিল নিবন্ধনে কোন খাজনা, নামজারি ও ডিসিআর লাগবে না। দলিল মূলে মালিক হলে শুধুমাত্র ডিসিআর ও নামজারি জমা ভাগ লাগবে। আমমোক্তার, বিনিময়, বন্টন, দানের ঘোষনা, হেবা ঘোষনা, বিলওয়াজ হেবা, অছিয়ত, ভুল সংশোধন, ঘোষনা পত্র, না দাবি ক্ষেত্রে খাজনা, নামজারি ও ডিসিআর লাগবে দলিল নিবন্ধনে এমন কোন অধ্যাদেশ জারি হয়নি। সাব রেজিষ্ট্রার মো. আলী আজগর অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি নিজের মনগড়া আইন তৈরি করে দলিল লেখক, দাতা ও গ্রহিতাকে চাপিয়ে দিয়েছেন। সাব রেজিষ্ট্রারের নিয়ম মতো কোন দলিল না হলেই তিনি দলিল নিবন্ধনে তালবাহানা শুরু করেন। এতে করে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে দলিল লেখক, দাতা ও গ্রহিতারা।
দলিল লেখকদের দাবি, ওমেদার হাফিজুর রহমান হাফেজ সাব রেজিষ্টার আলী আজগরের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতি দলিলে সিরিয়াল আগে পাওয়ার জন্য দলিল লেখকদের কাছ থেকে অতিরক্তি ৫-১০ হাজার টাকা আদায় করে থাকে। এতে আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে দলিল লেখকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহীদ সরকার ও সিনিয়র কয়েকজন দলিল লেখক একত্রিত হয়ে সাব রেজিষ্টার আলী আজগরের সঙ্গে দেখা করে জমা হওয়া সকল দলিল নিবন্ধনের অনুরোধ করেন। এতে সাব রেজিষ্টার দ্বি মত প্রকাশ করলে দলিল লেখকরা তাকে দলিল না করে চলে যেতে বলেন। এ খবর সকল দলিল লেখকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় হট্টগোল। এক পর্যায়ে সাব রেজিষ্ট্রারের অপসারণ দাবি করে ¯েøাগান দিতে থাকে। পরে সাব রেজিষ্ট্রার দলিল নিবন্ধন না করেই চলে যান। ফলে দলিল নিবন্ধন করতে আসা দলিল গ্রহিতা ও দাতারা বিপাকে পড়েন।

কাঁচপুর উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্ধা সেলিম মিয়া সোনারগাঁও নিউজকে বলেন, আমার মা কিডনী রোগী। তিন শতাংশ জমি বিক্রি করে মায়ের ডায়েলাইসিস করাবো। দু’দিন ঘুরে দলিল নিবন্ধন না হওয়ার কারনে ভোগান্তিতে পড়েছি। ফলে ডায়ালাইসিসের জন্য টাকার ধার করে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।

পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর গ্রামের শাহাজালাল মিয়া সোনারগাঁও নিউজকে বলেন, আমি একজন প্রবাসী। আজ রাত ১১ টায় আমার ফ্লাইট। জমি বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করতে চেয়েছিলাম। জমি নিবন্ধন না হওয়ার কারনে ঝামেলা এড়ানো সম্ভব হয়নি। আমার ঝামেলা থেকেই গেলো। এ সমস্যার সমাধান পেলাম না।

সোনারগাঁও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান সোনারগাঁও নিউজকে জানান, এ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে প্রতিদিন গড়ে ২শ থেকে ২৫০টি দলিল নিবন্ধন হয়ে থাকে। সাব রেজিষ্ট্রার ইচ্ছে করে সময় ক্ষেপনের মাধ্যমে দলিলের সকল প্রকার কাগজপত্র দেখে নিবন্ধন করার কারনে দলিলের জট তৈরি হয়ে আছে। আমরা দেখা করে জমা দেওয়া সকল দলিল নিবন্ধনের অনুরোধ করেছি। তিনি সকল দলিল নিবন্ধন করে দ্বিমত করেন। তাই তাকে চলে যেতে বলা হয়েছে।

সোনারগাঁও উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আলী আজগর সোনারগাঁও নিউজকে জানান, এ সাব রেজিষ্ট্রি অনেক দলিল নিবন্ধন হয়ে থাকে। আমি দুদিন এ অফিসে সময় দিয়ে থাকি। ৬ দিনের দলিল এখানে দুদিনে নিবন্ধন করা সম্ভব হয় না। ফলে নেতৃত্ব দানকারীদের ডেকে আলাপ করেছি। তাদের দাবি সকল দলিল নিবন্ধন করতে হবে। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে দ্বিমত থাকায় আমি চলে এসেছি। তবে দলিল লেখকদের বিক্ষোভের বিষয়ে তিনি জানেন না।

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © Sonargaonnews 2022
Design & Developed BY N Host BD