বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন। ফাউন্ডেশন গড়ে উঠার কারনেই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যেকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হয়।
তিনি আরো বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় ঐতিহাসিক পানাম নগরীর সংস্কার কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে একটি ভবনকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এটির বাস্তবায়ন সম্ভব হওয়ায় সরকার পুরো পানাম নগরী সংস্কার করবে।
মঙ্গলবার বিকেলে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্ধোধনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, স্বাধীনতার ঘোষনার মধ্যে দিয়েই শিল্পকলা, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন গড়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়। তবে এটি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উন্নয়ন কাজ শেষ হলে এটি সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের ঐক্যবদ্ধ থাকলে কখনো কেউ হারাতে পারবে না। ঐক্যবদ্ধের কোন বিকল্প নেই। সোনারগাঁও আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনে এ আসন পুনরুদ্ধার করতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনিরুল আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, নারায়নগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আবদুল্লাহ আল কায়সার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী, ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গণি প্রমুখ।
আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্য নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে প্রতিবছর মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করে। এবারের মেলা করোনার কারণে পিছিয়েছে। প্রতিবছরই জানুয়ারি মাসে এ মেলা শুরু হয়। ফাউন্ডেশনের ময়ূরপঙ্খী লোকজ মঞ্চে এ মেলার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী কেএম খালিদ অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে মেলা চত্বরে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। এছাড়াও লোকজ মঞ্চে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
মাসব্যাপী এ কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বাইস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারী পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। মাসব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের ছেলে মেয়েদের পরিবেশনায় বিলুপ্ত প্রায় গ্রামীণখেলা, পুতুল নাচ, কর্মরত কারুশিল্পীর কারুপন্যের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ২৪টি স্টলসহ ১০০টি স্টাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতদশা ৪৮ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে। এ বছর সোনারগাঁয়ের দারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প -মাটির চায়ের কাপ, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনিকাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাশেঁর কারুশিল্প, মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প, নাগরদোলা,বায়স্কোপ ও মিঠাই মন্ডার পসরা থাকলে ষ্টলগুলোতে। মেলা চলবে মঙ্গলবার থেকে আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
আপনার মতামত দিন