নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সোনারগাঁ থানায় তৎকালীন দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়। ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের দায়ের করা মামলায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশের বিভাগীয় তদন্তও হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন, সোনারগাঁও থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাধন চন্দ্র বসাক। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে মামলার বাদীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগে ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু আইনে মামলা হয়। সেই মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত।

মামলার বাদী আনিসুর রহমান আলমগীর বলেন, শুধু নির্যাতনই নয় টাকা দাবি করছিলেন তৎকালীন দুুই পুলিশ কর্মকর্তা। আমাদের দুইজনকে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করার পর জাহিদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেছিলো। আমি ছিলাম স্বাক্ষী। আমার উপরও অত্যাচার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমার পরিবারকে প্রতিনিয়ত ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে আসছিল।

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর রাতে দত্তপাড়া এলাকা থেকে কাপড় ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান ও যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলামকে চোখ ও দুই হাত বেঁধে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের থানার ভেতরে অমানুষিক নির্যাতন করে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এসময় ব্যবসায়ী জ্ঞান হারালে তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের হুমকি দেয়া হয় ঘটনা কাউকে না জানাতে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের আমলী আদালতে ওসি ও এসআইকে আসামি করে মামলা করেন ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান।

বাদী পক্ষের আইনজীবী মৃণাল কান্তি দত্ত জানান, ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের করা মামলায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৯ ফেব্রæয়ারী গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলো আদালত। গতকাল রোববার তারা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে শুনানী শেষে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করেন।

মামলার বাদী ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান আলমগীর বলেন, আজকের আদেশে আমি সন্তুষ্ট। আশা করি সামনে ন্যায় বিচার পাবো।
আসামী পক্ষেও থেকে হুমকি ধমকি দিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত মামলা উঠানোর জন্য আমাকে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আগেও আমার বাড়িতে লোকজন পাঠিয়েছেন যাতে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেই।