রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুরে নির্মাণাধীন বাস টার্মিনালে মাটি চুরি করে অন্যত্র বিক্রির অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম লিটন খাঁনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। তিনি গত কয়েকদিন ধরে রাতের আঁধারে মাটি চুরি করে ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করছেন। মাটি বিক্রির সঙ্গে নির্মাণাধীন বাস টার্মিনালের কর্তকর্তারা জড়িত থাকার কারণে কোন প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে যুবলীগ নেতা লিটন খাঁন মাটি চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কাঁচপুর নির্মাণাধীন বাস টার্মিনালে মাটি বিক্রির বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। একে অন্যকে দেখিয়ে দেন। তবে তাদের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার শিল্পনগরী কাঁচপুরে আন্ত:জেলা আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। ঢাকার যানজট কমানের লক্ষে এ বাস র্টামিনালটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। চলতি বছরের ৯ আগস্ট কাঁচপুরে টার্মিনালটির নির্মান কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। টার্মিনালটি চালু হলে এখান থেকেই চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৬ টি জেলার বাস নির্বিঘেœ চলাচল করবে। ফলে রাজধানীর যানজট নিরসনসহ যাত্রীসেবার মানও উন্নত হবে। যানজটের ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবেন ঢাকা ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে নির্মানাধীন বাস টার্মিনালে কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে কাঁচপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম লিটন খাঁন ব্যাজের মাটি চুরি করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন। এ মাটি চুরির সঙ্গে টার্মিনালের কর্মকর্তারা জড়িত বলে অভিযোগ তোলেন এলাকাবাসী। নিয়ম মাফিক মাটি সরিয়ে নিতে হলেও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ট্রেন্ডার প্রক্রিয়া করে সেটা বিক্রি করবেন। কিন্তু সেটা না করে লিটন খাঁনের নেতৃত্বে তার লোকজন রাতের আধারে মাটি চুরি করে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শফিকুল ইসলাম লিটন খাঁন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ ব্যবহার করে জমি দখল, সড়ক জনপদের জমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠাণ নির্মাণ, বিভিন্ন ফ্যাক্টুরীতে তার নেতৃত্বে চাঁদাবাজি করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোন প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
লিটন খাঁনের কাছ থেকে মাটির ক্রেতা সেলিম নামের এক যুবক জানান, লিটন খাঁনের কাছ থেকে প্রতি ট্রাক মাটি ২ হাজার ২শ টাকার বিনিময়ে ক্রয় করে থাকেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৭০-৭৫ ট্রাক মাটি ক্রয় করে তার নিচু জমি ভরাট করেছেন।
চেঙ্গাইন গ্রামের আব্দুর রউফ বলেন, টাকার বিনিমনে মাটি ক্রয় করে পুকুর ভরাট করছি। এ মাটিগুলো কাঁচপুর টার্মিনাল থেকে আনা হয়। মাটিগুলো যুবলীগ নেতা লিটন খাঁন বিক্রি করেন। শুধু এ অঞ্চলের আমরা নয়, অনেকেই সেই মাটি ক্রয় করে নিচু স্থান ভরাট করছেন।
অভিযুক্ত কাঁচপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম লিটন খাঁন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাটি আমার কাছ থেকে ক্রয় করে নিচু জমি ভরাট করছেন এমন কোন প্রমাণ নেই। এ মাটি চুরির সঙ্গে আমি জড়িত না। তবে নির্মাণাধীন টার্মিনালের কাদা মাটিগুলো বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
সোনারগাঁও থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত দিন