বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ
       
শিরোনাম :
৪০ গ্রামের মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত বিষ্ণান্দী-মান্দারপাড়া আর.সি.সি গার্ডার সেতুর উদ্বোধন  সোনারগাঁওয়ে বাড়িতে হামলা, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৩ মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রবিন ও সাধারণ সম্পাদক সাজু গ্রেপ্তার কাচঁপুরে স্বর্ণের কারিগর হত্যায় মামলা দ্বিতীয় স্ত্রীকে আদালতে প্রেরণ জাকের পার্টির কাউন্সিল সফল করার লক্ষে সোনারগাঁওয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত যাত্রীবাহী বাসের উপর মালবাহী লরি উল্টে ১ নারী নিহত, আহত ৮ সোনারগাঁওয়ে আজকের দর্পন পত্রিকার নবম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন কাচঁপুরে অন্ডকোষে আঘাত করে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ, দুই স্ত্রী আটক বিভাগীয় পর্যায়ে সোনারগাঁও জি আর ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের মেয়েরা সেমিফাইনালে উর্ত্তীণ মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম ফরাজী

ছুটির দিনে জমে উঠেছে কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব

হাসান মাহমুদ রিপন :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব লালনের এক তারার সুরের মুচ্ছুনায় জমে উঠেছে। শুক্রবার ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বিশাল চত্বর জুড়ে বসেছে এ মেলা। ফাউন্ডেশনই এ মেলার আয়োজন করেছে।  আগত দর্শনার্থীদের ভীড় ছিল মেলা প্রাঙ্গনে। যেন উৎসব আর আমেজে মেতে উঠেছে ফাউন্ডেশন ও এর আশ পাশ এলাকা। গ্রামের প্রতি নাড়ির চিরন্তন টান আর ভালবাসার আকর্ষনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলবদ্ধভাবে ভীড় করছে এ মেলায়। এক কথায় ছুটির দিনে লোক কারুশিল্প মেলা প্রাঙ্গন ছিল মূখরিত।  শুক্রবার দুপুর থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় শুরু হয়। সন্ধ্যার পর আরও ঢল নামে। চলে দোকানে দোকানে কেনাবেচা। বেচা কেনায় মেলা দোকানীদের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটে উঠে। এদিকে লোকজ মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ির বেশি চাপ থাকায় এ যানজট সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়েছে।

দেশের কৃষিজীবি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি থেকে উৎসরিত লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে এ বছর গত ১৮ জানুয়ারী থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী এ মেলা। প্রতিবছরই এ মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। এবারের মেলাও ভিন্নতায় এনেছে মেলার আয়োজক প্রতিষ্টান।  মেলায় শুধুই লোকজ ঐতিহ্যের পণ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে। লোকজ কারুপন্য ছাড়া অন্য কোন কিছুই প্রদর্শন ও বিক্রি হবে না। সোনারগাঁওয়ে এ লোকজ উৎসবে গ্রামীণ ঐতিহ্যের কিনা আছে? নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর তাঁত শিল্প থেকে শুরু করে সোনারগাঁওয়ের হাতি ঘোড়া, জামদানি, রাজশাহীর শখের হাড়ি, বাঁশবেত, সোনারগাঁওয়ের দারুশিল্প, নকশী কাঁথা, টেপা পুতুল, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতলপাটি, কিশোরগঞ্জের মৃৎশিল্প, মাগুরা শোলা শিল্প সবই আছে এই মেলায়।

শুক্রবার মেলা এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে মেলা চত্বরে দর্শনার্থীর ঢল। সোনারগাঁওয়ে ভ্রমণে বা পিকনিকে এসে অনেকে মেলাকে বাড়তি পাওনা হিসেবে কথা বলছেন অনেকেই।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে পিকনিকে আসা মিতুল, রকিব, আসমা, দোলন,রিতু,শিশির,নাদিয়া পল্লব, রায়হানসহ একদল যুবকরা সোনারগাঁও নিউজকে  জানান, এখানে পিকনিকে এসে সোনারগাঁওয়ের ইতিহাস ঐতিহ্যে দেখার পাশাপশি বাড়তি পাওয়া হিসেবে বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য কারুশিল্প মেলাটি উপভোগ করলাম।


নরসিংদীর বেলাবো থেকে আসা শিক্ষার্থী তনয়, মতিন,রাতুল জানায়, এক সময় গ্রাম বাংলায় তৈজস পত্র হিসেবে ব্যবহার হতো হাড়ি পাতিল, ঢুলা, ওসা, মাইট, মাছ ধরার চাই, পলো, ধান বানার ঢেকি এখন আর দেখা যায় না। বর্তমান প্রজন্ম এগুলো কি কাজে ব্যবহার হতো তা চিনতে তাদের কষ্ট হয়। হারিয়ে যাওয়া সকল ব্যবহার্য্য সকল কিছু এখানে আসলে দেখা মেলে। এগুলো সঙ্গে তাদের পরিচয় ঘটে। ভালো লাগে মেলার সকল পন্য দেখে।

টাঙ্গাইল থেকে আসা দর্শনার্থী সিদ্দিক দেওয়ান দম্পত্তি সঙ্গে কথা হলে তারা সোনারগাঁও নিউজকে জানান, সোনারগাঁওয়ের লোক ও কারুশিল্প মেলা দেশের একমাত্র লোকজ মেলা। এ মেলা দেশের অন্য কোথাও দেখা মেলেনি। দেশের হারিয়ে যাওয়া লোক ও কারুশিল্পকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয় এ মেলায়। ফলে ছেলে মেয়েকে নিয়ে এ মেলায় ঘুরতে আসলাম। এ মেলা দেখে নতুন প্রজন্মরা আরো বেশি করে জানতে পারবে। তবে মেলায় এসে খুবই ভাল লেগেছে শুধুমাত্র লোকজ কারুপন্য বিক্রি ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। কোন প্লাস্টিক পন্য নেই এ মেলায়। দেশের অন্য মেলায় প্লাস্টিক পন্যে সয়লাব থাকে।

ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মেলায় ঘুরতে আসেন সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, আমার স্ত্রীকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। বাংলার নানা ঐতিহ্যবাহী জিনিস দেখে খুব ভালো লাগছে। সব স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেছি। আমার স্ত্রীর জন্য একটি জামদানি শাড়ি কিনেছি। আর কিছু সৌন্দর্যবর্ধক পণ্য কিনেছি। তবে আজ ছুটির দিন হওয়ার মেলায় অনেক লোকসমাগম হয়েছে। এ কারণে একটু বেশি ভিড় হয়েছে।

রাজশাহী থেকে এসে মেলায় নকশীকাঁথার বাহারি পণ্য দিয়ে স্টল সাজিয়েছেন পারভীন আক্তার। ‘রাজশাহী নকশীঘর’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। তবে কারুশিল্প মেলায় তার স্টলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সন্ধ্যামালতী’। পারভীন আক্তার বলেন,  মেলার শুরু প্রথম শুক্রবার ও আজ শুক্রবার অন্যদিনের চেয়ে বেচা-বিক্রি ভালো হয়েছে। তবে ক্রেতার তুলনায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি। অনেকে আমার নানা পণ্য পছন্দ করে যাচ্ছেন, পরে এসে কিনে নিয়ে যাবেন। আশা করছি এবারের মেলায় আমার স্টলের নকশিকাঁথার মনোমুগ্ধকর ডিজাইন বেশ সাড়া পাবে, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে।
অপর ষ্টলের সোনারগাঁওয়ে নকশী কাঁথা শিল্পী হোসনে আরা বলেন, এ মেলা ইতিহাস ঐতিহ্যের মেলা। ছুটির দিন থাকায় লোক সমাগম ভালো হয়েছে। আমাদের বিক্রিও ভালো হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে দর্শনার্থী সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছি।

রংপুর থেকে শতরঞ্জির নানা পণ্য নিয়ে মেলায় দোকান সাজিয়েছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, শতরঞ্জি আইটেমের বিভিন্ন পণ্য দিয়ে দোকান সাজানো হয়েছে। ব্যাগ, জায়নামাজ, পাপস, টেবিল ম্যাটসহ নানা পণ্য তোলা হয়েছে। কটন সুতাসহ নানা সুতা দিয়ে এসব পণ্য তৈরি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার মেলায় অনেক লোক হয়েছে। তাই বিক্রি বেশি হয়েছে। আশা করছি, দিন দিন বিক্রির পরিমাণ বাড়বে।

দারুশিল্পী রফিকুল ইসলাম বলেন, এ মেলায় কাঠের তৈরি পন্যের কদর ভালো। প্লাস্টিক পন্য না থাকায় এ মেলার ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে। ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।

মেলার বিশেষ আকর্ষন হলো আয়োজক প্রতিষ্ঠানের বিশেষ প্রদর্শনী দেশের প্রথিতযশা কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে “কর্মময় কারুশিল্পী” প্রদর্শনী। এটি মেলার মূল চত্বরের মাঠের মাঝে অবস্থান। এ বিশেষ প্রদর্শনীতে ২৪টি ষ্টলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ৪৮ কারুশিল্পী দেশের হারানো ঐতিহ্যকে আবার নতুন করে আবিস্কার করছে। প্রদর্শনীর গ্যালারীগুলো কারুশিল্পীরা তাদের স্বহস্তে তৈরি করছে সোনারগাঁওয়ের দারুশিল্পের কারুকাজ, নকশীকাঁথা,  হাতি ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, রাজশাহীর মৃৎশিল্প-মাটির চায়ের কাপ, শখের হাঁড়ি, নকশীকাঁথা,  মুন্সিগঞ্জের শীতলপাটি, ঢাকার কাগজের শিল্প, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাশেঁর কারুশিল্প, মাগুরার শোলাশিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁওয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা পুতুল, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনিকাঁথা, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার  হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্পসহ ইত্যাদি কারুপন্য। এখানে শিল্পীরা বসেই তাদের নিপুন হাতে নিজস্ব মেধা ও মননে তৈরি করছে বাহারী কারুপণ্য এবং তা প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। প্রদর্শনীর গ্যালারীগুলোতে থরে থরে সাজানো কারুপণ্যের পসরা দেখে কেউ কেউ লোভ সামলাতে না  পেরে কেনাকাটা করছেন শখের চিত্রিত হাড়ি, শোলা শিল্প, কাঠের সামগ্রী, শতরঞ্জি, নকশী কাঁথাসহ বিভিন্ন কারুপন্য সামগ্রী। এখানে শিল্পীরা বসেই তাদের নিপুন হাতে নিজস্ব মেধা ও মননে তৈরি করছে বাহারী কারুপণ্য এবং তা প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। প্রদর্শনীর গ্যালারীগুলোতে থরে থরে সাজানো কারুপণ্যের পসরা দেখে কেউ কেউ লোভ সামলাতে না পেরে কেনাকাটা করছেন শখের চিত্রিত হাড়ি, শোলা শিল্প, কাঠের সামগ্রী, শতরঞ্জি, নকশী কাঁথাসহ বিভিন্ন কারুপন্য সামগ্রী।
মেলায় আবহমান বাংলার গ্রাম্য শালিশ, দাদি নাতির গল্প বলা, ঢেঁকিতে ধানভানা, নকশী পিঠা তৈরি,পালকিতে বর কনে, কনে দেখা, বর যাত্রা, গায়ে হলুদ, পন্ডিত মশাইয়ের পাঠশালা, জামাইকে পিঠা খাওয়ানো ইত্যাদি জীবন্ত প্রদর্শনী কারুশিল্প মেলার একপাশে চলছে। আবহমান বাংলার লৌকিক আচার এবং ঐতিহ্যগত সংস্কৃতিই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এ প্রদর্শনীতে। সোনারগাঁওয়ের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা এতে অংশগ্রহন করছে। মেলা বরাবরেই নাগরদেলা, বায়োস্কোপ, বিমান চড়কি, পুতুল নাচ রয়েছেই।

এক কথায় বলতে গেলে দারুণ এক আয়োজন বসেছে সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে। তবে এবার মেলা করোনার জন্য ছুটির দিনগুলোতে একটু বেশ ভাল জমে অন্যদিনের চেয়ে।  মেলা দেখে আর কারুপণ্য কিনে ক্লান্ত শরীরে বিকেলে বসে শুনছেন ময়ূরাকৃতির সোনারতরী মঞ্চ থেকে ভেসে আসা লালন, হাসন, ভাওয়াইয়া, জারি, সারি,  ভাটিয়ালি, বাউলগান, পালাগান, কবিগান, হাছন রাজার গান।

মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক এস এম রেজাউল করিম সোনারগাঁও নিউজকে জানান, লোক কারুশিল্পের প্রসারের জন্য প্রতি বছরের মত আকর্ষণীয় বিভিন্ন খেলা, গান, প্রদর্শনী অনুষ্ঠান ছাড়াও এবারের উৎসবে গ্রাম বাংলার আর্থসামাজিক জীবনের প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে বৈচিত্রময় ভাবে। এবারও শুধু লোকজ কারু পন্য দিয়ে সাজানো হয়েছে মেলাটি। শুধু লোকজ কারুপণ্যের পসরা বসেছে মেলা চত্বরে। ছুটির দিনগুলোতে বহু দর্শনার্থীর সমাগম হয়।

এবারের মেলায় মোট স্টল রয়েছে ১০০টি। মুড়ি মুড়কি, মন্ড মিঠাই থেকে শুরু করে গ্রামীণ হস্তশিল্প, বাঁশবেত, কাঠ, লোহা, পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী বিলুপ্ত প্রায় কুটির শিল্পের পসরার বসেছে মেলায়। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত মেলা চলবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © Sonargaonnews 2022
Design & Developed BY N Host BD