বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে যুবক আল আমিন হত্যা মামলায় আপন বড় ভাইসহ ৪ জনকে আটক করেছে র্যাব সদস্যরা। সোমবার রাতে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন সৈয়দ হোসেন সাগর, কবির হোসেন, নাসিমা বেগম ও হত্যার শিকার আল আমিনের বড় ভাই মো. ইউসুফ। তাদের সবার বাড়ি সোনারগাঁওয়ের সনমান্দি ইউনিয়নের সনমান্দি গ্রামে।
মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা সংবাদ সম্মেলনে আটকের বিষয়টি জানান। এর আগে সোমবার রাতে তাদের আটক করা হয়।
তিনি জানান, গত ১৭ জানুয়ারি সোনারগাঁওয়ে হামছাদি এলাকা থেকে আল-আমিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহত আল আমিনের মা অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাতে ৪ জনকে আটক করা হয়।
তিনি জানান, নিহত আল-আমিন এলাকায় চুরি ও ছিনতাই করত। এ জন্য প্রায়ই পরিবারকে বিব্রত হতে হতো। শালিস বৈঠকও হয়েছে। চুরি ছিনতাই থেকে বিরত রাখতে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। গত ৯ জানুয়ারি শিকল খুলে আল আমিন পালিয়ে যায়। পরে ফের চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে স্থানীয়রা ভিকটিমের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লেঃ কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, র্যাবের ছায়া তদন্তে আল আমিনের পরিবারের অনিহা এবং অসহযোগিতা পরিলক্ষিত হলে তার বড় ভাই ইউসুফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে সে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। তার বক্তব্য মতে, আল আমিন চুরি ও ছিনতাইয়ের কাজে জড়িত থাকার কারণে তার প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে আল আমিনের চাচাতো ভাই সৈয়দ হোসেন সাগর, প্রতিবেশী কবির এবং জহির তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আল আমিনকে তার বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ফসলের মাঠে নিয়ে সৈয়দ হোসেন সাগর, কবির এবং জহির গামছা দিয়ে মুখ বেধে মারধর করছে বলে আল আমিনের মা জানতে পারে। বিষয়টি মা, তার বড় ছেলে ইউসুফকে জানালে ইউসুফ ঘটনাস্থলে আসে এবং তার ভাইকে মারধর না করতে অনুরোধ করে। পরবর্তীতে ইউসুফ তার কর্মস্থল মোগড়াপাড়া পুরাতন সেবা ক্লিনিক চলে যায়। রাতে ফিরে সে ঘটনাস্থলে পুনরায় যায় এবং সেখানে তার মা, মামা শহীদুল্লাহ এবং সৈয়দ হোসেন সাগর, জহির এবং কবিরকে দেখতে পায়। ইউসুফ তার মাকে তার ভাই আল-আমিনের কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানতে পারে যে আল-আমিনকে সাগর, কবির এবং জহির মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে জমির আইলের উপর রেখেছে। ঘটনাস্থলে অভিযুক্তরা ইউসুফ, তার মা ও মামাকে মুখ খুললে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, ১৭ জানুয়ারি আল-আমিনের মরদেহ উদ্ধারের পর মামলা করতে গেলে সৈয়দ হোসেন সাগর নিহত আল আমিনের পরিবারকে মামলা না করতে বলে। এবং তদন্তে কোনো প্রকার সহযোগিতা না করতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। আটককৃতদের সোনারগাঁও থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে।
আপনার মতামত দিন