শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, জামপুর :
আদালতের নিষেধাজ্ঞা দিয়েও জমি দখল ঠেকানো যাচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে জামপুর ইউনিয়নের ওটমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যক্তি মালিকানা জমি দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ওই জমির মালিক সেলিম ভূঁইয়া বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ মোহসিনা ইসলাম ওই নির্মাণ কাজের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। নিষেধাজ্ঞার চিঠি হাতে পেয়েও নির্মাণ কাজ বন্ধ করেনি। গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশারীদের সহযোগিতায় ব্যক্তিমালিকানা জমি দখল করে জোরপূর্বক দখল করে এ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ঘটনায় রোববার বিকেলে জমির মালিক শহীদুল্লাহ টিটু ও নজরুল ইসলাম স্বপন একত্রিত হয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্তকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের ওটমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে শহিদুল্লাহ গং পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২০ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছে। ওই জমিতে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ রোপন করেন। সেই গাছ কেটে ওটমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জরিনা বেগম, স্থানীয় প্রভাবশালী লিপন চৌধুরী, লিটন চৌধুরী, জিসান চৌধুরী, আওলাদ চৌধুরী ও দেওয়ান কামালসহ ১০-১২জনের একটি দল সেই গাছ কেটে জমি দখল করে। দখল করা জমিতে পাকা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে শহিদুল্লাহর বড় ভাই মো. সেলিম ভূঁইয়া বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত বিবাদীদের তলব করে। আদালতের তলবে সাড়া না দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ চালিয়ে যায়। এঘটনায় গত ১১ জুলাই ও ৩০ আগষ্ট দু’দফায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ মোহসিনা ইসলামের আদালত নির্মাণ কাজে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। পরবর্তীতে দালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক জরিনা বেগম। আদালতের আদেশ অমান্যের বিষয়ে সোনারগাঁও থানা পুলিশও কোন প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত ওটমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জরিনা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আদালতের নোটিশ পেয়েছি। নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। তবে সীমানা প্রাচীরের কাজ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হচ্ছে তাই বন্ধ রাখা সম্ভব না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌলল অধিদপ্তরের সোনারগাঁও উপজেলা প্রকৌশলী আরজুরুল হক বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। মোকদ্দমা জমিটি ছেড়ে অন্য জায়গায় কাজ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোনারগাঁও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. দৌলতর রহমান বলেন, আদালতের প্রতি শ্রতি অনুগত থাকতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রধান শিক্ষককে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করতে বারণ করা হয়েছে।
সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক তদন্ত মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ নির্মাণ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ বন্ধের বিষয়ে দুজন ব্যক্তি এসেছেন। সঙ্গে আদালতের নিষেধাজ্ঞাও এনেছেন। তাদের বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত দিন