বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ইসলামপুর এলাকায় বালু ভরাট করে মেঘনা নদী দখলের অভিযোগ উঠেছে সামিট মেঘনা ঘাট পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে। গত কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীতে ঝেটি তৈরির অজুহাতে বড় বড় কয়েকটি কার্গো জাহাজের মাধ্যমে তারা ইট, পাথর ও বালু দিয়ে মেঘনা নদী দখল করে নিচ্ছে। এছাড়াও তারা একটি ৬ ইঞ্চি পাইপ ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে মেঘনা ব্রীজ, ইসলামপুর গ্রামসহ কয়েকটি কোম্পনি হুমকির মধ্যে রয়েছে। এতে করে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত¡াবধায়ক হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন ঝেটি তৈরি জন্য তাদের কাছে অনুমতি পত্র রয়েছে। তবে নদী ভরাটের বিষয়ে তিনি কোন উত্তর দেননি।
জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে ক্যাপিটাল ডেভেলপার কোম্পানি নামের একটি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট মূল্যে নদী ভরাটের কাজ নেয়। ওই কোম্পানি গত কয়েকদিন ধরে সেখানে কার্গো জাহাজের মাধ্যমে ইট, পাথর ও বালু দিয়ে মেঘনা নদীতে ফেলে ভরাট কাজ শুরু করে। এছাড়াও পাশ্ববর্তী স্থানে একটি ড্রেজারের মাধ্যমে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নিচ্ছে। মেঘনা ব্রীজের দুই পাশে ৬ কিলোমিটার স্থানে বালু উত্তোলন বা নদী ভরাটের সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
সরেজমিনের মেঘনা নদীর ইসলামপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সামিট মেঘনা ঘাট পাওয়ার কোম্পানি লিমিডেট নামের একটি কোম্পানি ক্যাপিটাল ডেভেলপার নামের ঠিকাদারী কোম্পানি তাদের কাছ থেকে নিদিষ্ট মূল্যে কাজ নিয়ে নদীর জায়গায় বালু ভরাট করা হচ্ছে। এছাড়াও সেখানে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করে যাচ্ছেন। পাশ্ববর্তী স্থানে একটি ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপুর এলাকায় সামিট পাওয়ার লিমিটেড নদী দখলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। কোনভাবেই তাদের নদী দখল ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। নদী এলাকায় ঘুরলেই দেখা যাচ্ছে ওই গ্রামের বসতি যেখানে রয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ৩শ ফুট নদীতে কোম্পানি দখল করে ঢুকে পড়েছে। ওই কোম্পানির নদী দখল ঠেকানোর জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ইসলামপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, সামিট পাওয়ার কোম্পানি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নদী দখল থেকে শুরু করে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। ফলে ইসলামপুর গ্রাম, মেঘনা ব্রীজ ভাঙ্গনের হুমকিতে পড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম জানান, বালু ফেলে নদী দখলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে নদী দখল মুক্ত করা হবে।
ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ডেভেলপার কোম্পানির তত্ত¡াবধায়ক ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের কাজের অনুমিত রয়েছে। তবে নদী দখলের বিষয়ে তিনি কোন কথা বলেননি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিএ) যুগ্ম পরিচালক মো. শহীদুল্লাহকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া মেলেনি।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.রেজওয়ান উল ইসলাম জানান, নদী দখলের বিষয়টি জানা নেই। ইউনিয়ন তহসিলদারকে নদী দখলের কাজ বন্ধ করার জন্য ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে।
আপনার মতামত দিন