বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সরকারি খাল দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এলাকাবাসী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, সোনারগাঁও পৌর এলাকার খালগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছরের মধ্যে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে সোনারগাঁবাসী চরম জনদুর্ভোগে পরেছে। জরুরী ভিত্তিতে দখলকৃত খালগুলো পুনরুদ্ধার করে খননের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা। এছাড়া অবৈধভাবে খাল দখলদারদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সোনারগাঁওয়ে খাল দখলে মহোৎসব চললেও প্রশাসনের নীবর ভূমিকা স্থানীয়দের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বিভিন্ন স্থানে যেসব খাল রয়েছে এর বেশিরভাগ খাল স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দখল করে নিয়েছেন। অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বালু ভরাট করে গড়ে তুলছেন বাড়ি বা বাড়িতে যাতায়াতের জন্য রাস্তা ও দোকানপাট। ফলে ওই এলাকায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ রয়েছে বহুবছর ধরে। অনেক স্থানে বছরের বেশির ভাগ সময়ই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ ছাড়াও বিভিন্ন আবাদী জমি ও ফল ফলাদি গাছপালা জোয়ার ভাটার পানি না আশায় বৃষ্টির কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আবাদী জমি ও ফলফলাদি গাছের ও জন দূর্ভোগ সহ খালের পানি বিনষ্ট এবং এডিস মশার লাভা জন্ম নিচ্ছে। ফলে এ পানি ব্যবহার অনুপুযোগী হয়ে পড়েছে। এ পানিতে গাবাদি পশু গোসল করানোসহ কৃষি জমিতেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
সোনারগাঁও পৌরসভার ভট্টপুর গ্রাম হয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের চাঁন্দের কিত্তী গ্রাম হয়ে বয়ে যাওয়া খালটি একমাত্র ভরসা। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জমান মধুর নেতৃত্বে তার ভাতিজা মাসুম বিল্লাহ মালেক একটি সিন্ডিকেট করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। তাদের ভয়ে কেউ মূখ খুলতে সাহস পায় না ।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দালালরা আঁতাত করে প্রথমে খালের তীরবর্তী স্থানগুলো দখল করে নিচ্ছেন। পরে বালু ভরাট করে পুরো খালই দখলে নিয়ে নিচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভা ঐতিহাসিক পঙ্খিরাজ খাল উদ্ধবগঞ্জ হতে ভট্টপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওযা খালটি দুপার্শে¦ অবৈধ স্থাপনা নির্মান করে। ঐতিহাসিক পঙ্খিরাজ খাল দখল করে ভট্টপুর গ্রামের আনিছুল হক খাঁন মাটি ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। ফলে পানি নিষ্কাশনের বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
সোনারগাঁও পৌর এলাকার ব্যবসায়ি আব্দুর রহিম খাঁন জানান, প্রতিটি বাড়িতে নৌকায় যাওয়ার জন্য খাল ব্যবহার করা যেতো। বর্তমানে সবগুলো খালই প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে। এ খালগুলোর আর চিহ্ন পর্যন্ত রাখেনি প্রভাবশালীরা। খালগুলো উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসী জোড় দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত খাল দখলকারী আবদুল মালেক জানান, খালের জমি ছেড়ে আমি আমার বাড়ির নির্মাণ করছি।
বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গ্রামবাসী চেয়ারম্যান আলআমিন সরকারের সাথে তারা দখলকৃত খালগুলো পুনরুদ্ধার করে খননের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান, পরে তিনি এলাকাবাসীকে খালগুলো পুনরুদ্ধারের আশ্বাস দেন।
এলাকাবাসীর দাবী, পঙ্খিরাজ খাল দখলমুক্ত করে ভট্টপুর গ্রামের আনিছুল হক খাঁন মাটি ভরাট করে দোকান ভেঙ্গে কালভাট করার দাবী জানান।
আনিছুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সরকারি খাল অনেকে দখল করে রেখেছে। আমিও একটু দখল করেছি। প্রসাশন বললে আমি দোকান সরিয়ে দেব।
সোনারগাঁও পৌরসভার সচিব সামসুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে প্রকৌশলী তানভীরের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
সোনারগাঁও পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জমান মধু বলেন, সিডিউলে যা কাজ আছে তাই হবে।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, দখলকৃত খালগুলো ম্যাপ দেখে দেখে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে উচ্ছেদ করা হবে।
আপনার মতামত দিন