শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, জামপুর :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে জামপুর ইউনিয়নের পেরাব এলাকায় কৃষকের কৃষি জমির মাটি চুরি করে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ ৪জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার রাতে পেরাবো কৃষিবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটি কাটার সময় পুলিশ তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার সকালে সোনারগাঁও থানার এসআই পঙ্কজ কান্তি সরকার বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃতদের পুলিশ আদালতে মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো রূপগঞ্জের বরপা এলাকার মহিবুল্লাহর ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম, আটি সিদ্ধিগঞ্জের আফরাফ আলীর ছেলে মো. নবীর হোসেন, সোনারগাঁওয়ের বেলাবো এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে মো. সুমন মিয়া ও নোয়াখালীর চর রশিদ গ্রামের মৃত হাসমত উল্লাহর ছেলে মো, কামাল হোসেন।
জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নে পেরাব এলাকার রাজমিনির কৃষি বাড়ির পাশে ওই এলাকার প্রভাবশালী ফয়সালের নেতৃত্বে হাসনাত, রিয়েলসহ ১০-১২জনের একটি সিন্ডিকেট ওই এলাকার রাতের আধারে সাধারণ কৃষকের জমির মাটি ভেকুর মাধ্যমে ৪০-৫০ ফুট গর্ত করে নিয়ে যায়। এতে করে ওই এলাকার কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এছাড়াও জীব বৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও কৃষকের জমির ভেঙ্গে পুকুরে পরিণত হয়। সাধারণ কৃষকের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার প্রতিকার পায়নি। এ নিয়ে ওই এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। বুধবার রাতে জোরপূর্বক কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৪জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে বৃহস্পতিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার পেরাব এলাকার ছগির আহম্মেদের ছেলে ফয়সাল, রাজ্জাক মোল্লার ছেলে হাসনাত ও জহিরুল হক মোল্লার ছেলে রিয়েলসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট করে রাতের আধারে কৃষকের কৃষি জমির মাটি জোরপূর্বক চুরি করে কেটে নিয়ে যায়। এতে বাধা দিতে গেলে হামলা ও মামলার ভয়ভীতি দেখানো হয়।
পেরাব এলাকার কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় কয়েকজন প্রাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আমাদের কৃষি জমির মাটি চুরি করে নিয়ে যায়। জমিগুলো গভীর ভাবে পুকুর করে কেটে নিয়ে যাওয়ার কারনে কোন ফসল উৎপাদনের সুযোগ থাকে না। পাশাপাশি পাশ্ববর্তী কৃষি জমিও ভেঙ্গে যায়।
নূর মোহাম্মদ নামের এক কৃষকের অভিযোগ, রাতের আধারে ফসলী জমির মাটি চুরি করে পাশ্ববর্তী ইট ভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। তাদের বাধা দিতে গেলেই তারা অত্যাচার করে।
অভিযুক্ত ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কৃষকের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে মাটি কেটে বিক্রি করে থাকি। তবে কারো জমির মাটি জোরপূর্বক নেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। সঠিক পদ্ধতিতে জমির মাটি কাটলে তবে পুলিশ লোকজন গ্রেপ্তার কেন করলো এমন প্রশ্নের জবাবে উত্তর পাওয়া যায়নি।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজওয়ান উল ইসলাম সোনারগাঁও নিউজকে জানান, কৃষি জমির মাটি চুরি করে ইটভাটায় বিক্রি অন্যায়। কোনভাবে এটা করতে দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে পুলিশ পাঠিয়ে ৪জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে দেওয়া হয়েছে। মাটি চুরির বিষয়ে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আপনার মতামত দিন