বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুরে বিদেশে থেকে মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রতিবন্ধকতা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা করেছে বিএনপির দুই নেতা। কাঁচপুর সেতুর ঢালুতে গত ২৮ অক্টোবর রাতে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে অভিযোগ তুলে বিদেশে অবস্থান করায় দুই নেতাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এ মামলার ১৯ নং আসামি হাজি মো. মোমেন খাঁন কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি চলতি মাসের ১৯ তারিখ চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। বর্তমানে তিনি ভারতের এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অপর জন মামলার ৩২ নাম্বার আসামী। কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি পীর মোহাম্মদ পিরুর ছেলে। সালেহ মোহাম্মদ শান্ত। কাঁচপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক। তার বাড়ি কাঁচপুর ইউনিয়নের পূর্ব বেহাকৈর গ্রামে। তিনি চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়া চাকুরী রত অবস্থায় অবস্থান করছেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বিদেশে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে পরিবারের পক্ষ থেকে সালেহ মোহাম্মদ শান্ত রাজনীতিতে জড়িত নয় বলে দাবি করা হলেও এলাকাবাসী তাকে ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক দাবি করেন। এছাড়াও সালেহ মোহাম্মদ শান্ত তার ব্যাক্তিগত ফেসবুকে মালয়েশিয়া চাকুরীরত অবস্থানের বিষয়টি ষ্ট্যাস্টাস দেন।
এদিকে ঢাকা- সিলেট মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নাশকতার অভিযোগে বিএনপির ৮৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে পুলিশ। গত রোববার বিকেলে সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিবুল্লাহ বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানকে প্রধান আসামি করা হয়।
জানা যায়, কাঁচপুরে ককটেল বিস্ফোরণ, সড়কে প্রতিবন্ধকতা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানসহ ৮৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। গত ২৮ অক্টোবর রাতে কাঁচপুরে বিএনপি নেতারা ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। তবে ঘটনাস্থলে থাকা কোন দোকানী এমন কোন ঘটনা তাদের চোখে দেখেননি বলে জানিয়েছেন। পরে মামলা হওয়ার পর সেখানে লোকজন ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাংচুর করেছে এ বিষয়টি জানতে পারেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিকাশ দোকানী বলেন, পুলিশ যে ঘটনার কথা উল্লেখ করে মামলা দিয়েছেন। সেখানে কোন প্রকার গাড়ি ভাংচুর, আগুনের ঘটনা ঘটে নি। সেখানে দুটি শব্দ পেয়েছেন। পুলিশ ছাড়া এখানে কেউ ছিল না। পরে শুনলাম ককটেল ফেটেছে।
সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, সামনে নির্বাচন। ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে গায়বি মামলা দিচ্ছে। আমাদের দুজন লোক বিদেশে রয়েছেন। তারাও এ মামলার আসামী। এতেই প্রমাণ হয় পুলিশ সরকারের পক্ষে বিএনপি নেতাদের হয়রানি করতে এ মামলা দিয়েছেন।
মামলার বাদি সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিবুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করবো না। ওসি স্যার এ বিষয়ে কথা বলতে পারবেন।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ -অঞ্চল) শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, দুজন নেতার বিদেশে অবস্থান করার বিষয়টি জানা নেই। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ মতে মামলা হয়েছে। তদন্ত করে এমন কিছু পাওয়া গেলে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
আপনার মতামত দিন