নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁও নিউজ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নয়া নগর বিলে দাউদ নামের এক ব্যক্তি ড্রেজারের মাধ্যমে কৃষি জমি থেকে বালু তুলে কৃষকের সর্বনাশ করার অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ বছর ধরে একই জমি থেকে তিনি বালু উত্তোলন করে এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকে। বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের কৃষি জমির ভেঙ্গে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হয়নি এলাকাবাসীর। অভিযুক্ত দাউদের দাবি তিনি এ জমি ক্রয় করে বালু উত্তোলন করেন। কারো জমি থেকে তিনি জোরপূর্বক বালু উত্তোলন করেন না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নবী নগর গ্রামের দাউদ মিয়া ও তার ছেলে আমির হামজা দীর্ঘদিন ধরে নয়ানগর এলাকায় একটি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য জমিটি ক্রয় করেন। তিনি দীর্ঘ ৪ বছর ধরে একই স্থান থেকে ছোট সোলো মেশিনের মাধ্যমে ড্রেজার তৈরি করে ওই জমির বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে জমিটি গভীর হয়ে পড়ে। জমিটির বালু গভীরভাবে কেটে নেওয়ার কারনে পাশ্ববর্তী জমির মাটি ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাছাড়া দাউদ সরকারি খাস সম্পত্তির মাটিও কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা তাদের জমি রক্ষার্থে একাধিকবার প্রতিবাদ করলেও কোন লাভ হয়নি।
সরেজমিনের ওই এলাকায় বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখে যায়, নয়ানগর বিলের মাঝে একটি প্রায় আড়াই একর সম্পত্তিতে একটি সেলো মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন চলছে। সেখানে পুকুরের মধ্যে একটি ঘরও নির্মাণ করা হয়েছে। সেই ঘরেই তাদের বসত। সেখানে বসে ছিলেন দাউদ মিয়ার ছেলে আমির হামজা ও একই এলাকার মোস্তফা। এলাকাবাসীর দাবি, ৯০শতাংশ সরকারি জায়গা দখল করে তিনি প্রথমে বালু উত্তোলন শুরু করেন। পরবর্তীতে সরকারি জমির পাশাপাশি কৃষকের কাছ থেকে ৪৫ শতাংশ জমির মাটি কেটে নেওয়ার কথা বলে সেখানে মাটি কাটতে কাটতে প্রায় আড়াই একর পুকুর হয়ে গেছে। পাশ্ববর্তী কৃষি জমি ভেঙ্গে গেলে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে সেই জমি থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে।
বিজয় নগর গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে কৃষক শাহিন জানান, ফসলি জমিতে মাটি কেটে গভীরভাবে পুকুর করার কারণে আশপাশের ফসলি জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে। বালু উত্তোলনের স্থানের পাশে তার সাড়ে ২১০ শতাংশ কৃষি সম্পত্তির রয়েছে। মাটি কেটে নেওয়ার তার প্রায় ৮০শতাংশ জমি ভেঙ্গে সেই পুকুরে পড়ে যায়। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃুষ্টি কামনা করেছেন।
চৌরাপাড়া গ্রামের ইসহাক মিয়া বলেন, আমার সাধারণ কৃষক। দাউদ মিয়া ফসলী জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার ফলে আমাদের জমি ভেঙ্গে পুকুরে চলে যাচ্ছে। তার কাছে জমি বিক্রি করা ছাড়া কোন উপায় দেখছি না। তাছাড়া ধান চাষ করা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। সেচের পানি জমিতে দিলে পুকুরে চলে যায়। এ জমির বালু উত্তোলন বন্ধ হওয়া উচিত।
অভিযুক্ত দাউদ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে আমির হামজা বলেন, এখানে কোন সরকারী সম্পত্তি নেই। তবে আমাদের ১৬ কানি সম্পত্তি রয়েছে। এখান থেকে বালু উত্তোলন করছি। তবে কৃষকের কোন ক্ষতি করছি না।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। খোজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপনার মতামত দিন