এ কে এম মুজাম্মিল হক মাসুদ :
বাংলার প্রাচীন রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের নৈসর্গিক অঙ্গনে ঝাড়লণ্ঠনের মতো হলুদ পুষ্পগুচ্ছ-রুপের পসরা সাজিয়েছে স্বর্ণালী সোনালু-কর্ণিকার।
সোনাঝরা এই ফুলের নাম সোনালু। সোনালি রঙের ফুল বিশিষ্ট বৃক্ষ। সোনালু চারদিকে স্বর্ণালি দীপ্তি ছড়ায়। সোনালুর পুষ্পসমুজ্জ্বল প্রস্ফুটন, নিবিড় উচ্ছ্বাস উন্মুক্ত জাদুঘর কেন্দ্রিক নয়নাভিরাম প্রকৃতি ও প্রতিবেশের সৌন্দর্য অবলোকন- সুবর্ণগ্রামের মায়াবী আকর্ষণেপরিব্রাজকগণ প্রশান্তিতে ঘুরে বেড়াতে প্রয়াস পান।
ঈদ-উল-ফিতরের ছুটিতে যে কেউ বেছে নিতে পারেন প্রাচীন রাজধানীশহর সোনারগাঁও। এর প্রাণকেন্দ্রেস্থ জাদুঘর, পানামসিটি, দরগাবাড়ি কমপ্লেক্স, সুপ্রাচীন গ্রাম গোয়ালদি, ফুলেরগ্রাম সাবদিসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।
গ্রীস্মকালে কৃঞ্চচূড়া, জারুল এবং সোনালুর হলুদবরণ সৌন্দর্যে চারপাশ মাতোয়ারা করে তোলে। গ্রীস্মের প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা নিয়ে যেসব ফুল ফোটে সোনালু তার মধ্যে অন্যতম।
গ্রীস্ম রাঙানো সোনালু দেখতে আকর্ষণীয়। ফুল ফোটার পর সবার মন-প্রাণ প্রশান্তিতে ভরে ওঠে।
সোনালু আলংকারিক বৃক্ষ হিসেবেও পরিচিত। এর রঙ কোমল,মিষ্টি হলুদ। স্নিগ্ধ হলুদ কর্ণিকার সত্যিই উপভোগ্য।
এই গাছ ২০-৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এর প্রস্ফুটন গ্রীষ্মকালে। গ্রীষ্মের শুরুতে সোনালু গাছ ফুলে ভরে যায়। বর্ণোজ্জ্বল কর্ণিকা গন্ধহীন।
দ্রাবিড় যুগ থেকে এই তরুর উল্লেখ পাওয়া যায়।সোনালুর সমুৎপওি দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ায়।
উজ্জ্বল মিষ্টি ফুলের জন্য আদর্শ পথতরু সোনালু। সোনারগাঁও জাদুঘরের নৈসর্গিক অঙ্গনে দৃষ্টিনন্দন লেকের পাড়ে অসংখ্য সোনালু দীপ্তি ছড়াচ্ছে। সোনালুকে বানরের লাঠিও বলে। কারণ এই গাছের ফল ও পাতা বানরের প্রিয় খাদ্য।
ফুলের হরিদ্রাবর্ণে সোনালু অপরুপ। এটি নজরকাড়ার মতো হলুদ পুষ্পগুচ্ছ। এর ফুলের আকৃতি আঙ্গুলের ডগার মতো।
সোনালুর পাপড়ি পা্ঁচটি ও পুংকেশর দশটি।সোনালুর ইংরেজি নাম Golden Shower Tree/Indian laburnum.বৈজ্ঞানিক নাম Classia afistula. Golden flower tree.
শোভাঞ্জন বৃক্ষ সোনালু আমাদেরপরিবেশ-প্রতিবেশকে সুন্দর করতে সহায়তা করে। রুক্ষ গ্রীস্মকালে প্রাণের স্পন্দন সোনালু। সোনালু ফুলের সৌন্দর্য অনেকটা চেরি ফুলের মতো।
প্রাচীনকাল থেকে সোনালুর ছাল,পাতা ও ফলের মজ্জা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
প্রকৃতির যত উপহার সব আশরাফুল মাখলুকাত মানুষের জন্য —— মানুষের চাই প্রকৃতি – বান্ধব সংস্কৃতি।
আপনার মতামত দিন